Mon. May 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
20নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মুজিবুল হককে মালয়েশিয়ায় অপহরণ করে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। মুক্তিপণের সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেয়া হলেও জীবিত ফেরত আসতে পারেনি মুজিবুল। তাকে দেশে ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে। ওই ঘটনায় মালয়েশিয়া পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করলে তাদের জবানবন্দির পর মজিবুল হকের লাশ শনাক্ত করা হয়। আর যারা মুক্তিপণ দাবি করেছিল তারাও নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা এলাকারই বাসিন্দা। শুক্রবার বিকালে মালয়েশিয়া থেকে অপহৃত ছাত্র মুজিবুল হকের লাশ তার নিজ বাড়ি ফতুল্লার কুতুবপুর সেহাচর এলাকায় নিয়ে আসা হয়। লাশ আনার পর মুজিবুলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্ধ্যার পর জানাজা শেষে সেহাচর তক্কারমাঠ কবরস্থানে মুজিবুল হকের লাশ দাফন করা হয়। নিহত মুজিবুল হক সেহাচর এলাকার আমিনুল হকের ছেলে। অপহরণের পর ফেসবুকে মজিবুলের হাত ও মুখ বাঁধা ছবি ছেড়ে পরিবারের লোকজনদের দেখানো হয়।

জানা গেছে, ২১ জুন ঢাকার এলিফেন্ট রোডের ওয়াকিয়া এডুকেশন নামের একটি এজেন্সির মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া যান মুজিবুল হক। পরে মালয়েশিয়ায় তার বন্ধুদের বাসায় গিয়ে ওঠেন। সেখান থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে যোগাযোগ রাখে মুজিবুল। পরবর্তীতে ৩ জুলাই শুক্রবার রাতে মুজিবুলের মায়ের মোবাইলে একজন ফোন করে জানায়, মুজিবুল তাদের জিম্মায় আছে। মুজিবুলকে জীবিত পেতে চাইলে ৪ জুলাই ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। নতুবা তাকে মেরে ফেলা হবে। পরে শনিবার মুজিবুল হকের ফেসবুকে তার হাত-পা বাঁধা ছবি পোস্ট করে পরিবারের সবাইকে দেখতে বলা হয়। ৬ জুলাই জিম্মিকারীরা ফোন করে মুজিবুলের সঙ্গে তার ভাই জাহিদুল হকের কথা বলায়। তখন মুজিবুল জানায়, টাকা না দিলে অপহরণকারীরা তাকে মেরে ফেলবে। ৭ জুলাই অপহরণকারীদের দেয়া বাংলাদেশ এজেন্ট ঢাকা শ্যামপুর আয়রন ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু টাকা দেয়ার পর ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও পরে আর কোনো যোগাযোগ করেনি অপহরণকারীরা।

নিহত মজিবুল হকের ভাই জাহিদুল হক জানান, যখন যোগাযোগ পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করি। এর মধ্যে অপহরণকারীরা ফেসবুকে মজিবুলের হাত ও মুখ বাঁধা ছবি ছেড়ে আমাদের দেখায়। অনেকদিন যোগাযোগের পর আমরা জানতে পারি, ১৬ জুলাই একটি লাশ উদ্ধার করে মালয়েশিয়া পুুলিশ। পরের দিন ১৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর শুনতে পাই ফতুল্লার রেলস্টেশন এলাকার মোস্তাকের ছেলে জুয়েল, তক্কারমাঠ এলাকার চয়ন ও মুরাদসহ ৬ জনকে মালয়েশিয়া পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তিতে মুজিবুলের লাশ শনাক্ত করা হয়। ওই লাশ এতদিন মালয়েশিয়া হাসপাতালের হিমাগারে ছিল।