Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫ : গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টাতে এশিয়া 123প্যাসিফিকের ১২ টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের পর স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তিতে শঙ্কিত বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। তারা মনে করছেন, এ চুক্তির ফলে বিশ্ব বাজারে পোশাক ব্যবসায়ে বাংলাদেশ কঠোর প্রতিযোগিতামূলক অবস্থার সম্মুখীন । এর আগে ৫ দিনব্যাপি ধারাবাহিক বৈঠকের পর দেশগুলোর মাঝে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল সৃষ্টিকারী এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এটি বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করবে। দেশি রফতানিকারকরা মনে করছেন, টিপিপি চুক্তির ফলে বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশের সরাসরি প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম ও দেশের সবচেয়ে বড় পোশাক রফতানির দেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও ১১ টি দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য অঞ্চল সৃষ্টি হবে। এতে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে ১৫.৬২ শতাংশ শুল্ক দিতে হয় বাংলাদেশকে আর ভিয়েতনামকে দিতে হয় ৮.৩ শতাংশ। এ চুক্তির ফলে মার্কিন বাজারে পোশাক রফতানিতে ভিয়েতনামকে কোনও শুল্ক দিতে হবে না। এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের সংকট সৃষ্টি হবে। কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং চিলির বাজারে শুল্ক সুবিধা ভোগ করে বাংলাদেশ। এ চুক্তির ফলে এই সুবিধাও হারাতে হবে। মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘চুক্তিটির ফলে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং চিলির বাজারে ভিয়েতনামের জন্য ‘শূণ্য শুল্ক’ লাভের একটি সুযোগ সৃষ্টি হলো। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে দেশগুলোর বাজারে একই সুবিধা ভোগ করে আসছিল।’ তিনি আরও বলেন, টিপিপি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিওটিও) আওতার বাইরে সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি। যেহেতু বাংলাদেশ বিশ্ব পোশাক ব্যবসায়ে একটি শক্তিশালী দেশ তাই এটা দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিপিডির এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘ভিয়েতনাম শক্ত প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় এ বাণিজ্য চুক্তি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্তকেও প্রভাবিত করবে।’ এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তাই আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদেরকে প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে ব্যবসায়ের খরচ কমাতে হবে। এ চুক্তিতে যোগ দিতে হলে নিজেদেরকে প্র¯‘ত করতে হবে।’ চুক্তির বিষয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাতলুব আহমেদ বলেন, ‘আমাদেরকে শুধু মার্কিন বাজারে মনোযোগ দিলে হবে না। অন্যান্য যেসব দেশে বাংলাদেশ শুল্ক সুবিধা ভোগ করে সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে। সমস্যা কাটাতে কারখানাগুলোতে উৎপাদন বাড়াতে হবে।’ মাতলুব আহমেদ বলেন, ‘যদি আমরা দেখি বাংলাদেশ বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তবে আমরা একসাথে বসে বিষয়টির সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবো।’ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ চুক্তির ফলে ভিয়েতনাম বড় মাত্রায় লাভবান হবে। এর ফলে বাংলাদেশকে প্রতিবছর লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে।