খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৫ : সিলেটে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন (১৩) হত্যা মামলায় অষ্টম দিনে দুই বিচারকসহ ৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ মো. আকবর হোসেন মৃধার আদালতে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সাক্ষ্য দেন মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম, মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আনোয়ারুল হক, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক তাহমিনা ইসলাম ও এসএমপির জালালাবাদ থানার কনস্টেবল ফয়সল আহমদ। একই আদালতের এপিপি এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সাক্ষ্যগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ২৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলায় সাক্ষী রয়েছেন ৩৮ জন। বৃহস্পতিবারও সাক্ষ্য নেওয়া হবে বলে জানান এপিপি জসিম উদ্দিন। এর আগে, ১ অক্টোবর মামলার বাদী এসএমপির জালালাবাদ থানার সাময়িক বরখাস্তকৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম ও রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান প্রথম দিন সাক্ষ্য দেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন হয়। প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই চোর অপবাদে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে (১৩) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পৈচাশিক নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় নির্যাতনকারীরা। প্রায় ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নিহত রাজন সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। গত ১৬ আগস্ট ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। এ মামলার অভিযুক্তরা হলেন, সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁও শেখপাড়ার মৃত আবদুল মালেকের ছেলে সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলাম, তার সহোদর মুহিত আলম ওরফে মুহিত আলম, আলী হায়দার ওরফে আলী ও শামীম আলম, দিরাইয়ের বাসিন্দা পাভেল ইসলাম, চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, জালালাবাদ থানার টুকেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের ছেলে ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ ওরফে নূর মিয়া, দুলাল আহমদ, আয়াজ আলী, তাজ উদ্দিন বাদল, ফিরোজ মিয়া, আছমত আলী ওরফে আছমত উল্লাহ ও রুহুল আমিন ওরফে রুহেল। তাদের মধ্যে সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলাম, শামীম আলম ও পাভেল ইসলামকে চার্জশিটে পলাতক দেখানো হয়েছে। এর আগে মুহিত আলমসহ ৮ জন এ ঘটনায় আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। গত ২৪ আগস্ট এ মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। গত ২৫ আগস্ট এসএমপির জালালাবাদ থানা পুলিশ ৩ পলাতক আসামির মালামাল ক্রোক করে। আলোচিত এ মামলায় গাফিলতির অভিযোগে এসএমপির জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, মামলার বাদী উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।