খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৫ : যারা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী, সেই উন্নত দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে অঙ্গীকার করলেও সে অনুসারে অর্থ ছাড় করছে না। আবার যতটুকু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, তা আবার কোনো কোনো মহল থেকে ঋণ হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশ দুদিকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। আগামী ৩০ নভেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন কপ-২১ সামনে রেখে সংগঠনটিএ সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে ‘সাধারণ কিন্তু স্ব-স্ব সক্ষমতা, ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বশীলতা’ নীতির ভিত্তিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার দাবি উত্থাপনে বাংলাদেশকে যথাযথ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে প্রতিশ্র“ত জলবায়ু তহবিল প্রদানে আইনি বাধ্যবাধকতা সংবলিত আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের দাবি তোলার বিষয়ে সঠিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সার্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান কেমন হওয়া উচিত, তা তুলে ধরা হয়। দূষণকারী উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে—এ বিষয়টি সম্মেলনের মাধ্যমে নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ঋণের পরিবর্তে উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ ও ‘নতুন’ অনুদানকে অন্তর্ভুক্ত করে জলবায়ু অর্থায়নের সর্বসম্মত সংজ্ঞা নির্ধারণ, জলবায়ু অর্থায়নের পথ নকশা প্রণয়ন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনার সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের ওপর জোর দাবি তুলে ধরা হয়। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দারিদ্র্য বিমোচনে প্রয়োজনীয় তহবিলের বরাদ্দ অব্যাহত রাখা এবং প্রতিশ্র“ত জলবায়ু তহবিল প্রদানের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার প্রদান ও তা বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা প্যারিস চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা, বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ) ও অন্যান্য উৎস থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহকে তহবিল প্রদানে অভিযোজনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির অবস্থানপত্র তুলে ধরেন সংগঠনটির জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন (সিএফজি) বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মু. জাকির হোসেন খান। বক্তব্য দেন টিআইবির উপনির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া খায়ের। এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্যারিস সম্মেলনে যাওয়ার আগেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট ঘোষণা আসা উচিত। এর প্রভাব সম্পর্কে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে পর্যালোচন করা উচিত। তিনি বলেন, ‘রামপাল নিয়ে প্যারিসে কথা হবে, এটা অবধারিত। আমাদের প্রতিনিধিরা সেখানে বিব্রত হোক, সেটা আমরা চাই না। তাই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসা উচিত।