Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

47খোলা বাজার২৪॥ সোমবা্বার৩০ নভেম্বর ২০১৫ : জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী জয়া আহসান। নান্দনিক অভিনয় দিয়ে দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন আগেই। সম্প্রতি এ অভিনেত্রী পশ্চিম বাংলার স্বনামধন্য নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির ‘রাজকাহিনী’ নামে একটি ছবির কাজ শেষ করেছেন বাংলাদেশে ছবিটি মুক্তি না পেলেও ইন্টারনেটের কল্যাণে অনেকেই এ ছবিটির পাইরেটেড কপি দেখেছেন।
ছবিতে জয়া আহসানের উপস্থিতি দারুণভাবে সমালোচিত হচ্ছে ঢাকায়। ছবিতে জয়া অভিনীত একটি দৃশ্য ভাইরাল আকারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবির সেই দৃশ্যটি ইউটিউবে প্রকাশের পরেই যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম ও মিডিয়া পাড়ায়। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিটির ছড়িয়ে পড়া একটি দৃশ্য দেখে চলচ্চিত্র প্রেমী অনেকে জয়াকে ধিক্কার জানিয়েছেন।
আবার কেউ কেউ তাকে পর্নো তারকা সানি লিওনের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকই বলছেন জয়া আহসানের মত একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া শিল্পীর এরকম দৃশ্যে অভিনয় করাটা দুঃখজনক।
আবার কেউ কেউ বলছেন ১৯৪৭ সালেরে দেশ ভাগের প্রেক্ষাপট নিয়ে ছবি নির্মাণের কথা বলে এ সিনেমাটিতে শুধু অশ্লীলতাকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু লোভের কারণে ‘রাজকাহিনী’কে না করতে পারেননি জয়া।
জয়া আহসানকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান। তিনি বলেন,একটা বিষয়ে কারও কোনো সন্দেহ নেই যে, জয়া আহসান বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। সামাজিকভাবেও তিনি সবার কাছে ইতিবাচক একটা ভাবমূর্তি ধরে রাখতে পেরেছেন। কিন্তু ‘রাজকাহিনী’ ছবির এই জয়া আহসান আমার কাছে একেবারেই অপরিচিত। ছবিতে এমন একটি দৃশ্যে অভিনয়ের তার কী এমন দরকার ছিল, তা আমি আসলেই বুঝতে পারিনি। শাকিব খান এও বলেন, বিষয়টা এমন নয় যে, ‘রাজকাহিনী’ ছবির প্রধান অভিনেত্রী জয়া। এ ছবির প্রধান অভিনেত্রী কিন্তু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আরও আছেন, ভারতের কলকাতার চলচ্চিত্রের অনেক অভিনয়শিল্পীরা। তাদেরই একজন হচ্ছেন আমাদের জয়া।
তিনি বলেন, যে জয়ার বাংলাদেশে অনেক ইতিবাচক ভাবমূর্তি, তার কিন্তু কোনোভাবেই এই ধরনের একটি ছবিতে এত ছোট চরিত্রে অভিনয় করার কোনো দরকার ছিল না। শাকিব আরও বলেন, কলকাতা থেকে কোনো প্রস্তাব পেলেই আমাদের এখানকার অনেকের আর কোনো হুঁশ থাকে না। মনে হয়, তারা যেন বিশ্ব জয় করে ফেলেছেন! মনে মনে তারা ভাবতে থাকেন, বাহ্ আমি তো কলকাতায় সুযোগ পেয়ে গেলাম। খুব শিগগিরই বলিউডেও জায়গা করে নেব। আসলে কি বিষয়টা এতটাই সহজ! শাকিবের পরামর্শ সবার আগে নিজের হিসেব বুঝে নিয়ে তারপর কাজ করার সিদ্ধান্ত নিন।
এ দিকে সমালোচনার বিষয়টাকে জয়া আহসান এক প্রকার উড়িয়েই দিয়েছেন। তিনি বলেন, সমালোচকদের কথা আমি খুবই গুরুত্ব দেই। তাদের কাছে যদি আমার অভিনীত দৃশ্যটিকে সমালোচনার যোগ্য মনে হয় তাহলে নিশ্চয়ই বিষয়টি সেরকম কিছুই। তিনি আরো বলেন, এ ছবিতে রুবিনার ভূমিকায় ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। আর এখানে কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ সব শিল্পীরা ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু সে তুলনায় আমার পর্দায় উপস্থিতি অন্য সবার চেয়ে বেশি। এতে অভিনয় করার মানে হচ্ছে ঐতিহাসিক একটা কাজের অংশ হয়ে থাকা। বাংলাদেশের একজন শিল্পী হিসেবে তারা সম্মান করে আমাকে নিয়ে গেছেন। আমি তাদের ছবিতে অভিনয় করেছি। সেটা আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। অভিনয়ের জায়গাও ছিল। দর্শকরা দেখলে বাকিটা বুঝতে পারবেন।
২০০৪ সালে ‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তারপর কেটে গেল এক দশক। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে দুইবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। প্রশংসিত হয়েছেন সর্বশেষ ভারতের বাজাকাহীনি করে তিরস্কার পেলেন।
অপরদিকে জয়া যা পারলেন না তা করে দেখালেন লাক্স সুপারস্টার বিদ্যা সিনহা মিম। তিনি বলিউডে অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবির নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘বিশেষ ফিল্মস’ এর কাজের প্রস্তাবকে না করে দিয়েছেন। এতে ঢালিউডে ব্যপক প্রশংশিত হয়েছেন মিম। বলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রীদের এমন কাউকে পাওয়া যাবেনা যারা এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেননি।
প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় আছেন মহেশভাট ও মুকেশভাট। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পী মিমকে নিয়ে ছবি তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করেন। অবশ্য মিম অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে খুশি ছিলেন। পরে নানা কিছু ভেবে না করে দিয়েছেন। কারণ হিসেবে মিম জানিয়েছেন,‘আমার দেশের ছবি আর বলিউডের ছবি এক রকম নয়। তাদের ছবি অনেক ফাস্ট। আমি ওদের সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারবো না ভেবেই না করে দিয়েছি’।এতো বড় প্রস্ত্যাব না করে দেওয়ার চলচ্চিত্র মহলের অনেকেই বাহবা দিয়েছেন মিমকে। দেশ ও দেশের সংস্কৃতিকে ভালোবেসে মিমের এই ত্যগ মিমকে অনেক উপরে নিয়ে যাবে এমনটাই মনে করছেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।
৪ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে মিম অভিনীত যৌথ প্রযোজনার ছবি চলচ্চিত্র ‘ব্ল্যাক’। রাজাচন্দ পরিচালিত এ ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন কলকাতার সোহম। ২০০৭ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্যদিয়ে অভিনয়ে নাম লেখান বিদ্যাসিনহা মিম। টিভিনাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনচিত্রের ও মডেল হয়েছেন তিনি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে মিম অভিনীত দুটি চলচ্চিত্র। ছবি দুটি হচ্ছে তানিয়া আহমেদ পরিচালিত ‘গুড মর্নিং লন্ডন’ আর ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘সুইটহার্ট’।
জয়া আর মিমের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলা ছবির এক দর্শক হাসানুল আমিন ব্রেকিংনিউজকে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, জয়ার বিষয়টি আমার মোটেও ভালো লাগেনি। কারন আমরা কোন সমাজে বাস করি সেটাও তো মাথায় রাখতে হবে। অনেক গণমাধ্যমে অনেকে দেখেছি বলার চেষ্টা করেছেন, জয়া অভিনয়ের জন্য যা করেছে তা তাদের চোখে ঠিকই আছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন কাল যদি হলিউডের কোন নামকরা পরিচালক আমার দেশের কাউকে নীল ছবিতে অভিনয়ের জন্য ডাকে, তাহলে সে ক্ষেত্রে সে কি করবে? কারন ওই ছবি তো ওই দেশে স্বীকৃত একটি পেশা। কিন্তু মনে রাখতে হবে সেটি তো আমাদের দেশে ধিকৃত। তাই একই বিষয়ে মিমের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান তিনি।