Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

14খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি ২০১৬: ২০১৫ সালে ভারতের বাজারে বিশেষ চমক দেখাতে পারেনি বলিউডি ছবি। সালমান খানের ৫০০ কোটির চমক ছাড়া বাকি সবকিছুই সাফল্যের নিরিখে নেহাত গড়পরতা। অন্যদিকে, হলিউড ভারতীয় ছবির বাজার ভালোভাবে দখল করেছে এ বছর। কারণ এ বছরই তিনটি হলিউডি ছবি ভারতে ১০০ কোটি রুপি ছাড়ানো আয়ের মাধ্যমে ছাড়িয়ে গিয়েছে ভারতীয় বাজারে নিজেদের অর্জনের আগের রেকর্ড। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে এই তথ্য।
‘ফিউরিয়াস সেভেন’ মুক্তির পর ভারত থেকে আয় করেছে ১৭২ কোটি রুপি বা আড়াই কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি। ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’ আয় করেছে সোয়া দুই কোটি মার্কিন ডলার। দুনিয়ামাত করা ‘অ্যাভেঞ্জারের সিক্যুয়েল ‘অ্যাভেঞ্জারস : এজ অফ আল্ট্রন’ও কম যায়নি, প্রায় পৌনে দুই কোটি মার্কিন ডলারের মতো আয় করেছে তারা ‘খান’ রাজত্বের বক্স অফিস থেকে।
হলিউডের কোনো সিনেমা ভারতে ১০০ কোটির রুপির আয় পেরোনো এই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৯ সালে জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার’, ঐতিহাসিক ‘টাইটানিক’ও পেরিয়েছে শতকোটি রুপি আয়ের চ্যালেঞ্জ।
টম ক্রুজের ‘মিশন ইম্পসিবল’-এর পঞ্চম কিস্তি ‘রগ ন্যাশন’ কিংবা তার আগের কিস্তি ‘ঘোস্ট প্রোটোকল’ও বেশ ভালো ব্যবসা করেছিল ভারতীয় বাজারে।
এদিকে বলিউডে ভারতীয় ছবিগুলোর মধ্যে এ বছর ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ৬২৬ কোটি রুপি, ‘বাহুবলি’ ৬০০ কোটি এবং ‘প্রেম রতন ধান পায়ো’ ৪০০ কোটি রুপি আয় করেছে দেশি-বিদেশি বক্স অফিস মিলিয়ে।
মজার বিষয় হলো, ‘প্রেম রতন ধান পায়ো’র জন্য ‘স্পেক্টর’ ভারতে মুক্তি দেওয়া হয় দুই সপ্তাহ পরে, তারপরেও মুক্তির প্রথম সপ্তাহে জেমস বন্ডের এই বহুল প্রতীক্ষিত ছবিটি তুলে নেয় পুরো ২৩ কোটি রুপি। একইভাবে আরেক খানের ‘দিলওয়ালে’র জন্য এক সপ্তাহ ধরে রাখা হয় ‘স্টার ওয়ার্স : ফোর্স অ্যাওয়েকেনস’-এর মুক্তি। কিন্তু এতসব নাটকের পরও দর্শকদের টেনেছে হলিউড, যার প্রমাণ ২০১৫ সালের ভারতীয় বক্স অফিস।
তাহলে কি রুচিতে পরিবর্তন আসছে ইন্ডিয়ান দর্শকদের? হতে পারে, কারণ ‘পাইরেসির’ তলোয়ার একদিকে চিড় ধরাচ্ছে ভারতীয় বক্স অফিসের নিজস্ব ছবির আয়ে, অন্যদিকে পয়সা খরচ করে দর্শকও পুরোনো একঘেয়ে কাহিনী ফেলে হলিউডি ছবির দিকেই ঝুঁকছেন।
এ ছাড়া ‘ইন্ডিয়ান-কানেকশন’ও প্রভাব ফেলছে হলিউডের ভারতীয় বাজারে, যার প্রমাণ ইরফান খানের ‘লাইফ অব পাই’, যা ২০১২ সালে ভারতে আয় করে ৮৮ কোটি রুপি। একইভাবে ‘দি অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান’ প্রথম সপ্তাহে ভারতে রেকর্ড পরিমাণে আয় করে আর অতি সাম্প্রতিক উদাহরণ জুরাসিক ওয়ার্ল্ড। তবে ব্যাপার যাই হোক না কেন, এটা পরিষ্কার যে ভারতে হলিউডি সিনেমার চাহিদা এবং দর্শক, দুটোই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ভারতীয় গণমাধ্যম এবং বলিউডের কর্তাব্যক্তিরাও। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি উঠছে, চীনের মতো করে ভারতেও বিদেশি সিনেমার প্রবেশ ও প্রচার নিয়ন্ত্রণ করার। প্রয়োজনানুসারে এ বিষয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাবনাও উঠেছে এরই মধ্যে।
এখন পর্যন্ত ভারতে সর্বোচ্চ আয় করা হলিউডের ১০টি সিনেমা
১। ফিউরিয়াস সেভেন- ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৭২ কোটি রুপি)
২। অ্যাভাটার – ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৪৫ কোটি রুপি)
৩। জুরাসিক ওয়ার্ল্ড-২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৫২ কোটি রুপি)
৪। অ্যাভেঞ্জার্স: এজ অব আল্ট্রন- ১৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০৮ কোটি রুপি)
৫। স্পাইডারম্যান ৩- ১৬ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০৮ কোটি রুপি)
৬। ২০১২- ১৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০২ কোটি রুপি)
৭। দি অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান- ১৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯৬ কোটি রুপি)
৮। দি অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান ২- ১৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯০ কোটি রুপি)
৯। লাইফ অব পাই- ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৮৮ কোটি রুপি)
১০। টাইটানিক- ১২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৮৪ কোটি রুপি)