Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

53খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬: আমি তো অত বড় স্টার না। তাহলে এ বিষয়টা নিয়ে এত ঘাটাঘাটি করছেন কেন? একটা মেয়ে কোথায় যোগ দিল আর দিল না- সেটাকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কি আছে! এ বিষয়ে আমি মুখ খুললে তো অনেকেই টিকতে পারবে না। কই, আমি তো কিছু বলছি না। আমি এসব নোংরামিতে ছিলাম না। এখনও নেই।’
গত বছর মিডিয়া অঙ্গনের শেষ ৪দিন ছিল সংবাদ পাঠিকা-উপস্থাপক ফারহানা নিশোর। ২৬ ডিসেম্বর তিনি মুখফুটে শুধু বললেন, ‘কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সবকিছু চূড়ান্ত, হাতে পেয়েছেন নিয়োগপত্র। নতুন বছরের ২য় দিন অনুষ্ঠান প্রধান হিসেবে যোগ দিচ্ছেন একুশে টেলিভিশনে।’ ব্যস, অনেকটা তুড়ি মেরেই যেন বছরের শেষ দিনগুলো করে নিলেন একান্ত নিজের। মিডিয়ায়-খবরে-আড্ডায় নেমেছিল তখন ‘হবু অনুষ্ঠান প্রধান ফারহানা নিশো’ কেন্দ্রিক ঢাকের বাদন।
‘শুভেচ্ছা। একুশেতে যোগ দিয়েছেন নিশ্চই? বলুন, কেমন কাটলো অনুষ্ঠান প্রধানের প্রথম দিন?’ নিশো ঝকঝকে কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আসলে আজ (২ জানুয়ারি) আমি অফিসে (একুশে টিভি) গিয়েছি। তবে জয়েন করিনি। ঘন্টা দুয়েক থেকে চলে এলাম। আল্লাহর রহমতে সামনের সপ্তাহে জয়েন করবো। আমাদের চেয়ারম্যান স্যার বিদেশে তোৃ উনি আসলেই জয়েন করবো ইনশাআল্লাহ।’
সেদিন পাল্টা জিজ্ঞাসা ছিল, কেন! সব ঠিকঠাক থাকলে চেয়ারম্যানের জন্য কালক্ষেপণ কেন? নিশো জানালেন, ‘আসলে শুধু যে চেয়ারম্যান স্যারের অপেক্ষায় জয়েন করিনি, তাও নয়। যমুনা টিভিতে রিজাইন দিলাম আজ (২ জানুয়ারি)। ওখানেও তো কিছু ফর্মালিটিজ আছে। যেমন আইডি কার্ড, গাড়ির স্টিকার ইত্যাদি ফেরত দিতে হবে না? সেসব গুছিয়ে ৯ জানুয়ারির দিকে একুশেতে বসবো।’
নিশোর এমন কথপকোথন আর একুশে টিভির ভেতরে-বাইরে নানামাত্রিক ‘ফিসফাসফিস’, যেন ইঙ্গিত দিচ্ছিল অন্যকিছুর। এরই নাম হয়তো চাঁদ কপাল, নয়তো বছরের(২০১৫) শেষটার মতো শুরুটাও(২০১৬) জনপ্রিয় এ উপস্থাপিকার জন্য বরাদ্দ থাকবে কেন!
বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, একুশে টেলিভিশনে ফারহানা নিশো’র যোগদান নিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে গেল ৯ তারিখ পর্যন্ত একরকম স্নায়ুযুদ্ধ চলেছে একুশে দপ্তরে। যুদ্ধটি এমন- একজন নিশো যোগ দিলে চাকরি ছাড়বেন অন্তত ৩০ জন! ছোট পর্দার এ মিষ্টি মুখের কি এমন অপরাধ? কেন তাকে ঠেকাতে এত ‘ইন হাউজ’ প্রতিরোধ? একুশের এক শীর্ষ কর্তা জানান অব দ্য রেকর্ড কারণ।
তিনি বলেন, ‘কারণ তো অনেক আছে। সেসব ভেঙে বলার দরকার নেই। তার সঙ্গে আমাদের তো সরাসরি কোনও শত্রুতা নেই। শুধু এটুকু বলছি, আমরা আসলে তার অতীত এবং বর্তমান জীবনের কিছু নেতিবাচক বিষয় প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে তুলে ধরেছি। বোঝানোর চেষ্টা করেছি, এসব কারণে নিশো এখানে যোগ দিলে প্রতিষ্ঠানের লাভের চেয়ে ক্ষতিটাই হবে। যা আমরা চাই না।’
যা হবার তাই হলো। সূত্র জানায়, সব বিশ্লেষণ শেষে একুশে টিভির চেয়ারম্যান এস আলম-এর রায় সংখ্যা গরিষ্ঠের দিকেই ঝুঁকলো উচ্চপদস্থ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। গেল ৯ জানুয়ারি নাগাদ ফারহানা নিশোর মুষ্টিবদ্ধ একুশের লোভনীয় নিয়োগপত্র প্রত্যাহার করে নিল কর্তৃপক্ষ।
এবার কি বলছেন নিশো? আবারও অস্বীকার করলেন- বললেন, ‘এখনও জয়েন করিনি। তবে জয়েনিং বাতিলের খবরটি সত্য নয়। কারণ, আমি অপেক্ষায় আছি চেয়ারম্যান স্যারের। তিনি বিদেশে। দেশে আসছেন ১৮ তারিখ। তারপর আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
তাকে পাল্টা জানানো হলো, আপনি সম্ভবত ভুল তথ্য দিচ্ছেন। একুশের চেয়ারম্যান এখন ঢাকায়। তাছাড়া আমাদের হাতে স্পষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে- আপনার নিয়োগপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে একুশে কর্তৃপক্ষ।
উত্তরে নিশো খানিক উত্তেজিত অথবা অসহায়। বললেন, ‘আমি তো জানতাম চেয়ারম্যান স্যার বিদেশে। তাছাড়া একুশে থেকে আমাকে এখনও হ্যাঁ-না কিছুই জানায়নি। ফলে আপনারা যা বলছেন, সে বিষয়ে আমি এখন কোনও কথা বলতে পারছি না।’
নিশো আরও বলেন, ‘আমি তো অত বড় স্টার না। তাহলে এ বিষয়টা নিয়ে এত ঘাটাঘাটি করছেন কেন? একটা মেয়ে কোথায় যোগ দিল আর দিল না- সেটাকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কি আছে! এ বিষয়ে আমি মুখ খুললে তো অনেকেই টিকতে পারবে না। কই, আমি তো কিছু বলছি না। আমি এসব নোংরামিতে ছিলাম না। এখনও নেই।’
প্রসঙ্গত, ফারহানা নিশো সর্বশেষ যমুনা টিভিতে সিনিয়র সংবাদ উপস্থাপক এবং গাজী টিভিতে ‘আজকের অনন্যা’ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করছিলেন।
২০০৩ সালে এনটিভিতে সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু হলেও মাঝে গ্রামীণফোনের টেকনিক্যাল ডিভিশন ও ওয়ারিদ টেলিকমে প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগে কাজ করেন বেশ কিছুদিন।