খোলা বাজার২৪, রোববার, ২৯ মে ২০১৬: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘উত্তরাধিকার’ কবিতাটির প্রথম শব্দ দুটি যেভাবে উচ্চারণ করেছিলেন তিনি, তা যেন আমার কান থেকে আর নামতেই চায় না। কতজনের কণ্ঠেই তো এই কবিতার আবৃত্তি শুনেছি। কিন্তু ‘নবীন কিশোর’কে যে এভাবে ডাকা যায়, তা ভাবনাতেও আসেনি। হুমায়ুন ফরীদির সহজাত প্রবণতা ছিল সরাসরি দর্শক বা শ্রোতার মনে ঢুকে যাওয়ার। ‘নবীন কিশোর’ তারই একটি উদাহরণ। অভিনয়ই ছিল তাঁর বিচরণক্ষেত্র, এ কারণেই হয়তো আবৃত্তিতেও তাঁর স্বচ্ছন্দ যাতায়াত।
তিনি বলতেন, অভিনয় ছাড়া আর কিছুই শেখেননি। আর তাই প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাওয়া, সেই চরিত্রকে আবিষ্কারের চেষ্টা করতেন।
সমসাময়িক অভিনয়শিল্পী আল মনসুর বলেছিলেন, ‘এ মাটিতে জন্ম নেওয়া সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চির উজ্জ্বল অভিনেতা হলেন হুমায়ুন ফরীদি।’ নানা বৈচিত্র্যের চরিত্রে অভিনয় করে ফরীদি সেটা প্রমাণ করেছেন।
আমার সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল তাঁর চিরবিদায়ের অল্প কয় দিন আগে। সে সময় শিল্পীদের মূল্যায়ন করেছিলেন তিনি এভাবে, ‘তিন ধরনের শিল্পী আছে পৃথিবীতে। ভালো শিল্পী, বিপদগ্রস্ত শিল্পী আর অশিল্পী। বিপদগ্রস্ত শিল্পী সব সময় মনে করে, এই বুঝি পড়ে গেলাম!ৃএখনকার শিল্পীরা ত্রস্ত। দৌড়াচ্ছে। এই দৌড়টা বন্ধ করে হেঁটে যাও। টাকার পেছনে না ছুটে ভালো অভিনয় করো। টাকা এমনিই আসবে।’
বড্ড প্রাসঙ্গিক মনে হয় তাঁর এই কথাগুলো। আরও মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, ‘চল্লিশে জীবনটা সুন্দর হয়। ষাটে হয় আরও সুন্দরৃ।’ ষাট বছরেই চলে গিয়েছিলেন তিনি, ২০১২ সালের ১৩ ফেব্র“য়ারি।
আজ তাঁর জন্মদিনে চির উজ্জ্বল এই অভিনেতার প্রতি রইল শ্রদ্ধা।