সভায় অন্য বক্তারা বলেন, ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে বিএনপিকে আরো সুসংগঠিত হতে হবে। সুসংগঠিত দল ছাড়া এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো যাবে না। যতক্ষণ না এই সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারবে, ততক্ষণ তারেক রহমানকে ফেরানো সম্ভব হবে না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যারিস্টার আমীনুল হক, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবীর খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর বিএনপির কাজী আবুল বাশার, মহিলা দলের শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের মুনির হোসেন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, মীর সরফত আলী সুপু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, ড. মোর্শেদ হাসান খান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ কৃষি বিষয়ক সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ ফারুক, মীর নেওয়াজ আলী, শরীফুল আলম, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, হাফেজ আবদুল মালেক, হেলেন জেরিন খান, রেহানা আখতার রানু, শাম্মী আখতার, খন্দকার মারুফ হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম ও সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে এক এগারোর সরকারের মতো ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার অংশ হিসেবেই এক এগারোর সরকার পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলো। তারই অংশ হিসেবে ওই সময়ে আমাদের দলের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে নানাভাবে মামলা-মোকদ্দমা দেয়া হয়, নির্যাতন করা হয়। তারেক রহমান এক এগারো সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার, সেই ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত আছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে তাদের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের দমনপীড়নের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের প্রতি, স্বৈরাচারী সরকারের সরকারের প্রতি জনগণ বিক্ষুব্ধ। দেশে গণতন্ত্রের কোনো স্পেস নেই। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই। জঙ্গি ভয়ে আতঙ্ক জনপদ। দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, ব্যাংক লুট হয়, রিজার্ভ লুট হয়। গুম-খুন-মামলা-হামলায় দেশের মানুষ জর্জরিত।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সারা বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। এ থেকে দেশের মানুষ আজ মুক্তি চায়। এই মুক্তি একমাত্র দিতে পারে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশাল সৃষ্ট শূণ্যতাকে পূরণ করার জন্য এই দলকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই দলেরই দায়িত্ব অলিখিত বাকশালের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা।
সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা যে গণতন্ত্র হারিয়েছি, তাকে পুন:প্রতিষ্ঠা করা বিএনপিরই দায়িত্ব। ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। সবার সমান অধিকার সৃষ্টি করতে হবে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ থেকে মুক্ত করতে হবে। এসব বাস্তবায়ন করতে হলে শুধু ঘরের ভেতরে শ্লোগান দিয়ে হবে না।
তারেক রহমান সম্পর্কে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অচিরেই তারেক রহমান দেশে ফিরবে। আমরা বীরের বেশে তাকে দেশে আনতে চাই, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনে আন্দোলন করতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে হবে। তাহলেই তারেক রহমানের কারামুক্ত দিবস করা সফল হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যতক্ষণ না এই সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবো এবং পরিস্থিতি উত্তরণ ঘটাতে না পারবো তারেক রহমানকে ফেরানো সম্ভব হবে না।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিভিন্নভাবে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র সৃষ্টি করে সরকার বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বিএনপিকে সাময়িকভাবে দূর্বল করা যাবে কিন্তু একেবারে শেষ করা যাব না। এই বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আবার ক্ষমতায় আসবে।
তিনি বলেন, দেশের যে অবস্থা তাতে শুধু তারেক রহমানই নন, খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ মাঠ পর্যায়ের নেতারা পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় আসামী। বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। খালেদা জিয়াকে বার বার মামলায় হাজিরা দেয়ানো হচ্ছে। অথচ সরকারের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে থাকা ছয় হাজার ৫০০ মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা। কিন্তু বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে আরো মামলা হয়েছে।
মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে হলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য নেতাকর্মীদের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলে আমাগী ছয় মাসের মধ্যে সরকার পতন ঘটিয়ে তারেক রহমানকে দেশে আনান সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে তারেক রহমানকে সাজা দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু মামলা আর সাজা দিয়ে জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।