Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

54kখোলা বাজার২৪, রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬: দলীয় প্রভাব বিস্তার করার কারনে লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের খেতেপাড়া গাংচিল বাসস্টান্ড মাঠে অস্থায়ী গরুর হাট থেকে এ বছর কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। এমনটাই অভিযোগ রয়েছে এই হাটটিকে ঘিরে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, হাটটি ডহরি, গৌরগঞ্জ খালের তীর ঘেষা হওয়ায় দেশের দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে নদী পথে শত শত কোরবানী পশুবাহী ট্রলার পদ্মা পাড়ি দিয়ে ডহুরি খাল হয়ে বালিগাঁও, তালতলা দিয়ে ঢাকা- নারায়নগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার বড়বড় কোরবানীর পশুর হাটে বেশি দামের আশায় বিক্রির উদ্দ্যেশে নিয়ে আসনে। হাটটি খালের তীর ঘেষা হওয়ায় স্থানীয় ইজাদাররা অনেকটা জোর করে গরু মালিকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গরুগুলো হাটে নামিয়ে নেয়া হয়।
গত বছরের ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার হাটিতে কালেকশন হয়েছে ছিলো প্রায কোটি টাকার কাছাকাছি। কিন্তও বিশাল এই হাটটি এবার ইজারা দেয়া হয়েছে মাত্র ২ লাখ টাকায় । ধারন করা হচ্ছে এবার এই হাঠ থেকে কালেকশন হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা। অথচ এই হাটের ঠিক অপরদিকে রয়েছে টংগীবাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বালিগাঁও হাট। যে হাটটি গত বছর ইজারা দেয়া হয়েছিলো ২৮ লাখ টাকা। নতুন খেতেরপাড়ার হাটটির কারনে গত বছর প্রায় ৫ লাখ টাকা লোশান খেয়ে এবার আর কেউ ইজারা না নেওয়া ঐতিহ্যবাহী বালিগাঁও হাটটিও এবার খাস কালেকশনে চলছে। এতে করে বালিগাও হাটের ঐতিহ্যের পাশাপাশি বিপুল পরিমান রাজস্ব ও হারাচ্ছে সরকার। বর্তমানে বালিগাঁও হাটটি প্রায় ধবংসের পথে। এবার বালিগাঁও হাটটি ডাক না হওয়ায় খাস কালেকশন চলছে । খেতেরপাড়ার এই হাটের কারনে বালিগাঁও বাজারের দীর্ঘ ৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটটি নিস্বহয়ে পরেছে। সেই সঙ্গে দুটি হাট থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

অন্যদিকে খেতেরপাড়া গরুর হাটটি পর পর তিনবার ইজারা নিয়েছেন লৌহজং উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রশিদ সিকদারের আপন ভগ্নিপতি বর্তমান খিদিরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বেপারী। দলীয় প্রভাব বিস্তারের ফলে এই হাটটিতে অন্য কেউ শিডিউল ফেলতে সাহস পায়না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খেদেরপাড়া এলাকার বাসিন্ধারা অভিযোগ করে বলেন, লৌহজংয়ে সকল মানুষের কাছে আতংকের আরেক নাম রশিদ সিকদার। তার বিরুদ্ধে কেউ এই হাটের ইজারা নেয়ার সাহস পায়না । ইজারা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার আগেই সিকদারের সন্ত্রাসী বাহিনী ইজারার আবেদন কারিদের বাড়ীতে এসে হাজির হয়ে হুমকি দামকি দেয়। তিনি আরো বলেন, লৌহজংয়ে চেয়ারম্যান , মেম্বার, আর হাট- বাজার যাই বলেন, এখানে পুরো উপজেলাটা রশিদ সিকদারের কথায় চলে। সবক্ষেত্রে আতœীয় করন করা হয়েছে। অন্য কেউ এই হাট ইজারা নিয়ে লাশ হবে নাকি?

হাট ইজারাদার আনোয়ার হোসেনের সাথে ফোনালাপকালে তিনি বলেন, আমি এবার নিয়ে পর পর তিনবার ইজারা পেয়েছি। অন্য কেউ ইজারা না নিলে আমার দোষ কি? আপনি তো ক্ষমতার অপ- ব্যবহার করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আওয়ামীলীগ নেতাই নই আমি এই ইউনিয়নের বিপুল ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আপনি এসে দেখে যান কত সাংবাদিক আমার এখানে বসে থাকে আর আড্ডা দেয়। আপনি কি আমাকে টাকার বিনিময়ে কিনতে চাচ্ছেন বা লোভ দেখাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন শোনার পর পর তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান বলেন, পর পর তিন বছরের গড় হিসাব করে এবার ২ লক্ষ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। হাটের সিডিউল মুন্সীগঞ্জে পাঠানো হয়েছে। অন্য কেউ শিডিউল না পেলে আমরা কি করবো।সরকারী রেটের একটু বেশী পেলেই আমরা অন্য কাউকে দিয়ে দিতাম। ইজারাদাররা কত টাকা কালেকশন করলো সেটা আমার দেখার বিষয় না ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব ফজলে আজীম বলেন, আমি লৌহজং উপজেলার এই হাটটির ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।