Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

72ফেসবুকে বইছে সমালোচনার ঝড়। রেডিও স্টেশনের লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে অশ্লীল শব্দ চয়ন, অঙ্গভঙ্গি ও নাচানাচির জন্য এই সমালোচনার শিকার হয়েছেন রেডিও স্টেশন স্পাইস এফএমের ( ৯৬.৪) আরজে তাজ।
রেডিও স্পাইসের ইউটিউব চ্যানেলে ‘কামড় দিও না’ প্রচার হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনা। অশ্লীল কথার গানটির সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গিতে নাচতে দেখা যায় আরজে তাজ ও অভিনেত্রী শেহতাজকে। এই অশ্লীল গানটি রেডিও স্পাইসের থিম সং বলে জানা গেছে। এমন অশ্লীল কথার গান কী করে একটি গণমাধ্যমের থিম সং হতে পারে সে নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
শুধু তাই নয়, একই ধরনের কুরুচির পরিচয় পাওয়া গেল ‘লালন নাইট’ নামের আরেকটি ভিডিওতে। লালন নাইট বলা হলেও বাজানো হয়েছে কামাল পাশার লেখা বিখ্যাত গান ‘দিলে কি দয়া হয় না’। এ গানটিতেও তাজকে উত্তেজক পোশাক ও অঙ্গভঙ্গিতে দেখা যায়। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মডেল-সঞ্চালক শ্রাবণ্য তৌহিদা।
অনুষ্ঠানটি প্রচার হয় গেল বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে। ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, ‘কামড় দিও না’র সাফল্যের পর গর্জিয়াস ডিভা আরজে তাজ লালন নাইট উদযাপন করছেন। লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিওতেও আগের গানটির মতো অশ্লীল ও নেতিবাচক মন্তব্য পরিলক্ষিত হয়।
পাশাপাশি একটি ভিডিওতে উপস্থাপিকা শ্রাবণ্য তৌহিদাকে নিয়ে তাসনুভা এলভিনকে প্রাঙ্ক ভিডিওর মাধ্যমে নগ্ন হয়ে লোশনের বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার প্রস্তাব দেন আরজে তাজ। সেই ভিডিওতে দেখা যায় এক পর্যায়ে নগ্ন হয়ে বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ার জন্য রাজিও হয়ে যান এলভিন।
এই ভিডিওগুলো নিয়ে এরইমধ্যে চলেছে নানা রকম সমালোচনা ও প্রতিবাদ। চলচ্চিত্র পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল একটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘তাহারা হাবিয়া দোযখের প্রতিনিধি! একজন আর,জে তাজ, অন্যজন শেহতাজ। স্পাইস এফ,এম নামক এক বেতারের কর্মী। অনেক মশলাদার তাদের নর্তন-কূর্দন। যেমন গানের কথা, তেমনই তাদের পরিবেশনা। রেডিও স্টেশন স্পাইস এফএম ৯৬.৪-এর পেজ থেকে ছাড়া তাদের থিম সং ‘কামড় দিও না’। ‘ফুল দিও কলি দিও কাঁটা দিও না, আস্তে আস্তে চুমা দিও কামড় দিও না’ উদ্ভট এই কথার গানের ভিডিওতে তারা যা করেছেন সেটা দেখে আমি ভাষাহীন এবং ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের আছে অনন্য ইতিহাস। ভাষার জন্য রক্ত দেয়া আর তার বিনিময়ে বাংলা। সামনেই ফেব্র“য়ারি।অমর একুশে। ভাষা বিকৃতির দায়ে ভাষার মাসের আগেই এদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক কোনও শাস্তির ব্যবস্থা কি করা যায় না?’
চ্যানেল নাইনের অনুষ্ঠান ও ইভেন্ট প্রধান তানভীর খান এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘একটি এফ এম রেডিওদর ঢ়ৎধহশ রহঃবৎারবি দেখলাম । সেখানে আমাদের একজন টিভি উপস্থাপিকা অতিথি হিসেবে ছিলেন, আরজেদর অনুরধে ঐ উপস্থাপিকা তার এক বান্ধবী কে ফোন দেয় এবং তাকে একটি আন্তর্জাতিক পণ্যের বিজ্ঞাপনের মডেল হওয়ার প্রস্তাব দেয়। আরজে উপস্থাপিকার বান্ধবীকে নগ্ন হয়ে বিজ্ঞাপনটি করার প্রস্তাব দেয় এবং উপস্থাপিকা সেই প্রস্তাবটির সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং তা বান্ধবীকেও করতে বলেন। আরও অনেক কিছু।’
তিনি আরো লেখেন, ‘রেডিও আমাদের মিডিয়ার একটি অংশ, এবং এই কথা গুলো শুধু রেডিও নয় ফেইসবুক ফ্যান পেইজে ভিডিও তেও দেখা যায়। একটি অশ্লীল গান এই রেডিও কল্যাণে এখন মানুষের মুখে মুখে। আমার অনুরোধ সকল তারকাদের/শিল্পীদের কাছে, এই রেডিওটিকে বর্জন করুন। রেডিওটির নাম স্পাইস এফএম।’
অন্যদিকে সংগীত পরিচালক আহমেদ হুমায়ূন ফেসবুকে লেখেন, ‘আসুন আমরা যারা গান বাজনা করি, তারা আজ থেকে থ্রিএক্স গান বানাই। এতে অবাক হবার কিছু নাই। আর আমিও পাগল হয়ে যাইনি। কারণ, আমরা ভদ্র সমাজ বলতে যাদের বুঝি, তাদের ছেলে-মেয়ে যদি অনায়াসে বাসা-বাড়িতে বসে বাবা-মার সামনে এসব গান শোনে, আবার এই গান ছেড়ে নাচানাচি করে ভিডিও করে ফেবসুকে পোস্ট করে, তাহলে আমাদের বানাতে দোষ কি? আর নিচে নামার জায়গা নেই, সেগুলোই প্রমাণ করে এই গানগুলো। কি যে গানের ভাষা, আর কি মিউজিক, কি গায়কি, আর কি ভিডিও, কোনদিকে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি?’
সংগীতশিল্পী শাহরিয়ার রাফাত লেখেন, ‘আলোচনা না, তীব্র প্রতিবাদ জানালাম। দূর হোন আমার বাংলাদেশ থেকে। আপনি জানেন না, আপনার পরিবারের মানুষগুলো দেখছে? হয়ত পরিবার আছে কি না সন্দেহ। একজন রেডিও জকি ও একটা গণমাধ্যম কখনো এইগুলো করতে বা দেখাতে পারে না।’
একটি রেডিও কেমন করে এই ধরনের অশ্লীল গান, প্রাঙ্ক ভিডিও, নোংরা নাচ প্রকাশ ও প্রচার করে সে নিয়ে উঠেছে জোরালো প্রতিবাদ। স্পাইস এফএম’র লাইসেন্স বাতিলের দাবি করেছেন অনেকেই।