Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

12kখােলা বাজার২৪, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: বেগমগঞ্জ উপজেলায় গতি হারিয়ে ফেলছে বিএনপি। তবে দলের দূ’সময়ে এ উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভরসা হলো উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আবদুর রহিম এবং উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম।

বর্তমান সরকারের শাসনামলে মামলা-হামলার শিকার নির্যাতিত নেতা-কর্মীরা আদালতে গিয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আবদুর রহিম এর নিকট হাজির হয়। আদালতে দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে সর্বাত্বকভাবে সহযোগীতা করেন এডভোকেট আবদুর রহিম। দলীয় নেতা-কর্মীদের জামিনের জন্য মোভ করা ছাড়াও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন তিনি।

অপরদিকে নির্যাতিত অসহায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নানাভাবে সাধ্যমতে সহযোগীতা দেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম। প্রতিটি ইউনিয়ন-গ্রাম থেকে দলের ত্যাগী অসহায় নেতা-কর্মী তাদের দূর্দিনে হাজী আবুল কাশেমকে পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাজনীতিতে ত্যাগী নেতা-কর্মীর মূল্যায়ন না হলে কর্মীদের মাঝে হতাশা নেমে আসে, তেমন অবস্থা চলছে বেগমগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে।

বেগমগঞ্জ আসনে ১৯৯১ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক পেয়ে বিএনপি থেকে প্রার্থী ছিলেন তৎকালীন যুবদল নেতা বরকত উল্যাহ বুলু। তিনি প্রবীণ নেতা জেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মো. হানিফ থেকে বিপুল ভোট বেশী পেয়েছিলেন। সেই ধারা অব্যাহত ছিল ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সন পর্যন্ত। ২০০১ সনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম. এ হাশেম। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সনেও বরকত উল্যাহ বুলু আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন।

তবে বেগমগঞ্জ বিএনপির অবস্থান এখন আগের মতো নেই। থানা কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি এমনকি যুবদল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন কোন কমিটিরই মেয়াদ নেই। কোন কোন কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১ যুগ আগে। বলতে গেলে থানা থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত সব কমিটিরই মেয়াদ অনেক আগে শেষ হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন থেকে কোন কমিটিই পূর্ণাঙ্গ হতো না। কেবলমাত্র সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক এর নাম ঘোষণা করা ছিল রেওয়াজ। সম্মেলন ডেকে থানা কমিটি হয়েছিল ১৯৯২ সালে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হওয়ায় ওয়ার্ড থেকে থানা পর্যন্ত বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে তৃণমূল নেতারা হামলা-মামলা খেয়ে ধরাশায়ী।

বরকত উল্যাহ বুলু বেগমগঞ্জে জনপ্রিয় সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিটি গ্রামে-পাড়ায়-মহল্লায় তাঁর পদচারণায় নেতাকর্মীরা চাঙ্গা ছিল। গত কয়েক বছর ধরে তিনি শতাধিক মামলা গ্রেফতারী পরোয়ানা ও অসুস্থ্য থাকার কারণে তাঁর পক্ষে বেগমগঞ্জে আসা সম্ভব হচ্ছেনা। এছাড়া স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নামে অনেক মামলা থাকায় দলীয় কর্মকান্ড একরকম ঝিমিয়ে পড়েছে। কেবলমাত্র জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে যুবদল সক্রিয় রয়েছে বেগমগঞ্জে।

বেগমগঞ্জে বিএনপি চাঙ্গা হবে কবে? ইতিমধ্যে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ইন্তেকাল করেছেন। নতুন সাধারণ সম্পাদক পদে কে দায়িত্ব পাবেন তা নির্ভর করছে বরকত উল্যাহ বুলুর উপর। যদিও তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য নেতা হাজী আবুল কাশেম। তাঁর সাথে বরকত উল্যাহ বুলুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে।

১৯৯১ সনের নির্বাচনে সময় থেকে বরকত উল্যাহ বুলুর নেতৃত্বে অবচল আস্থা রেখে বিএনপি রাজনীতি করে যাচ্ছেন হাজী আবুল কাশেম। অনেক নেতা পালাবদল করলেও তিনি কখনো বরকত উল্যাহ বুলুকে ছেড়ে অন্য কারো নেতৃত্বের প্রতি আস্থা আনেননি। সেই কারণে হাজী আবুল কাশেম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে দল শক্তিশালী হবে এমনটাই মনে করেন তৃণমূল বিএনপি। তাছাড়া হাজী আবুল কাশেম বেশ কয়েকবার পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন। মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

বেগমগঞ্জ বিএনপিকে চাঙ্গা করতে হলে তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য নেতাদের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা জরুরী। তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা নেই এমন কাউকে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব দিলে বেগমগঞ্জে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এডভোকেট আবদুর রহিম, হাজী আবুল কাশেম, শাহ আবদুল্যাহ আল বাকী, মোরশেদুল আমিন ফয়সল, কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস, মঞ্জুরুল আজিম সুমন, নাজমুল গণি চৌধুরী মান্না, জহির উদ্দিন হারুন, কবির উদ্দিন, হুমায়ুন কবির গংদের ঐক্যবদ্ধতা বেগমগঞ্জে বিএনপিকে পূণরায় জাগিয়ে তুলবে এমনটাই আশা করে দলের হাজারো নিবেদিত প্রাণ।