Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

65খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৭: ডাক্তার এজাজ। মজার অভিনেতা হিসেবে সবাই তাঁকে চিনলেও পেশাগত জীবনে তিনি একজন সফল চিকিৎসক। অভিনয়ের পাশাপাশি গাজীপুর চৌরাস্তার চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখেন। ডাক্তার এজাজ ও অভিনেতা এজাজ দুজন ব্যক্তি কেমন? এসব নিয়েই এজাজের সাথে কথা বলেছেন মাহতাব হোসেন

কেমন আছেন? ব্যস্ত নাকি?
ভালো আছি ভাই। এই মুহূর্তে আমি তো মৌলভীবাজারে শুটিং- এ আছি। ঢাকার বাইরে আমি খুব বেশি শুটিং এ আসি না। ঈদের কাজের জন্য অন্তত চার দিন সময় বের করে রাখি। সেই অনুযায়ী শিডিউল করেই এখন বাইরে শুটিং করছি।
অভিনয় নিয়ে খুব ব্যস্ত আছেন মনে হয়?
না না আমি সেভাবে ব্যস্ত থাকি না। আমি নাটকের শুটিং এর জন্য অর্ধেক পারিশ্রমিক নেই কেন না আমি অর্ধেকবেলাই শুটিং করি।

আপনার সাথে তো সবাই আপনার কাজ নিয়ে কথা বলে-
‘হ্যাঁ হ্যাঁ কাজ নিয়েই তো কথা বলে। কাজ ছাড়া তো কেউ অকাজে আমার সাথে আমার সাথে কথা বলে না। ‘

আমি আপনার সাথে একটু অকাজে কথা বলি?
(এজাজ হেসে ফেললেন) বলেন বলেন। অকাজের কথাও জীবনের অংশ।

আপনি অভিনেতা হিসেবে কেমন আর ডাক্তার হিসেবে কেমন?
আমি অভিনেতা হিসেবে একদম নিচুমানের। তবে পরিচালক আমার কাছ থেকে যেটা আশা করেন সেটা দেওয়ার চেষ্টা করি। ডাক্তার হিসেবে যদি বলেন, তাহলে বলবো আমি যতটুকু জানি ঠিক ততটুকুই চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করি। এর বাইরে আমি কখনোই অনুমানভিত্তিক চিকিৎসা করি না।

পড়াশোনা করেছেন কোথা থেকে?
আমি রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছি। ১৯৮৪ সালে সেখান থেকে এমবিবিএস পাশ করি। এরপরে পিজি ( বর্তমানে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে ডিএনএম (পোস্ট গ্রাজুয়েশন-ডিপ্লোমা ইন নিউক্লিয়ার মেডিসিন) করেছি।

আপনি প্র্যাক্টিস কোথায় করেন, রোগী দেখার ফি কত নেন?
মজার একটি প্রশ্ন করেছেন। গাজীপুর চৌরাস্তায় আমার চেম্বার, সেখানেই রোগী দেখি। আর ফি এর কথা বলছেন? এখন কোন ডাক্তার কত ফি নেয় আমার জানা নেই। গাজীপুরে আমার সমমনা ডাক্তাররা ৬০০ টাকা ফি নেন। কিন্তু সরকার থেকে একবার ৩০০ টাকা ফি নির্ধারণ করে দিয়েছিল সেটাই এখনও আছে। বাড়াতে পারিনি। কিন্তু আমার কাছে যারা আসেন তাঁদের মধ্যে ৫০ ভাগ মানুষ ৩০০ টাকা দেন। বাকি ৫০ ভাগের মধ্যে কেউ ২০০ টাকা কেউ ১০০ টাকা আবার কেউ কোনো ফি দেন না। আমার কোনো দাবি নেই।

তাহলে ডাক্তার হিসেবে বেশ উদার বলা চলে?
তা জানি না, তবে আপনি গাজীপুর চৌরাস্তায় একদিন নেমে আমার কথা বলবেন। সেখানে সবাই আমাকে ‘গরিবের ডাক্তার’ নামে ডাকে। গরিবের ডাক্তার হিসেবেই গাজীপুরে আমার আমার নাম হয়ে গেছে। (হাসি) কারণ যাদের টাকা পয়সা তারা জানে আমার কাছে এলে টাকা না থাকলেও তাদের চিকিৎসা হবে। সবাই এখন ডাক্তারদের কসাই বলেন। আল্লাহর রহমতে আমার নামের সাথে ‘কসাই’ শব্দটা যুক্ত হয়নি।

আপনি হুমায়ূন আহমেদ এর সাথে কাজ করেছেন, তাঁর সাথে কাজের অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করতেন-
আসলে একজন অতুলনীয় মানুষের কথা বললেন আপনি। তাঁর মতো মানুষ আমি আর পাবো না। তার সাথে একেকটা কাজ ছিল আমাদের জীবনে একেকটা উৎসবের মতো। উনার সাথে কাটানো সময়ের অনেক সুখস্মৃতি রয়েছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি…

আচ্ছা এইবার একটু কাজের কথায় আসি, আপনার বর্তমান সময়ের কাজ সম্পর্কে একটু বলেন-
আমি মুহূর্তে যে নাটকটার কাজ করছি তা হলো ঈদের একটা ৭ পর্বের ধারাবাহিক। নাম হলো লাভ অ্যান্ড কোং। এটি পরিচালনা করছেন মাসুদ পারভেজ। এখন বাংলাভিশনে যাচ্ছে ধারাবাহিক নাটক ‘লড়াই’। এটি রচনা করেছেন, মুহাম্মদ মামুন-অর-রশীদ। আর পরিচালনা করেছেন আল হাজেন। এনটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক ‘সম্রাট’। শফিকুর রহমান শান্তুনুর রচনায় ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন সৈয়দ শাকিল ও এটিএন বাংলায় ফজলুর রহমানের ‘জীবনের অলি গলি। আরও কিছু নাটকে শুটিং করেছি, অন এয়ারের অপেক্ষায় আছে।

এই যে আপনি অভিনয় করছেন, আবার রোগীও দেখছেন, কিভাবে দুই দিক সামাল দিচ্ছেন?
আমি প্রথমেই বলেছি, শুটিং এ পারিশ্রমিক অর্ধেক নিই। আমি অর্ধেক বেলা শুটিং করি। আর বাকি অর্ধেক বেলা চেম্বারে বসি।

রোগী দেখার সময় রোগীরা আপনার অভিনয় সম্পর্কে কথা বলে না?
বলতে চায়, কিন্তু আমি সেটা দিই না। ব্যক্তি জীবনে আমি মজার মানুষ বলা যেতে পারে। কিন্তু রোগী দেখার সময় আমি খুব সিরিয়াস।

ডাক্তার হিসেবে কতটুকু হ্যাপি আর অভিনেতা হিসেবে কতটুকু হ্যাপি?
আমি ডাক্তার হিসেবেও ১০০ ভাগ হ্যাপি, অভিনেতা হিসেবেও শতভাগ হ্যাপি। আমাকে যদি বলেন, আমি পরের জনমে কি হতে চাই, তাহলে বলবো আমি পরের জনমেও এই এজাজই হতে চাই। অভিনেতা এজাজ হতে চাই, ডাক্তার এজাজ হতে চাই। আমার এই স্ত্রী বাচ্চা ও মা’কেও পরের জীবনে পেতে চাই। কারণ এই জীবন আমার অনেক সুখের। আমি অনেক হ্যাপি।