খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ১২ জুলাই, ২০১৭: যৌথ প্রযোজনা সিনেমা তৈরিতে নিষেধাজ্ঞায় নতুন আলোচনা হচ্ছে। নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নির্মাণ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রবিবার চলচ্চিত্র পরিবারের সঙ্গে বৈঠকে নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তথ্য মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তথ্যসচিব মরতুজা আহমদের সভাপতিত্বে চলচ্চিত্রের সুষ্ঠু বিকাশ ও উন্নয়ন নিয়ে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সভায় ‘চলচ্চিত্র পরিবার’র প্রতিনিধিদের মধ্যে অভিনেতা ফারুক এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে দেশের চলচ্চিত্রের স্বার্থে যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ নীতিমালা দ্রুত যুগোপযোগী ও পূর্ণাঙ্গ করে নতুন নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্পর্কিত কার্যক্রম স্থগিত এবং চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে ৫০টি এইচডি প্রজেক্টর মেশিন কিনে সিনেমা হলগুলোর প্রজেকশন কার্যক্রমে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মনজুরুর রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন, চলচ্চিত্র পরিবারের সদস্য দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, খোরশেদ আলম খসরু, মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, অভিনেতা রিয়াজ ও জায়েদ খান উপস্থিত ছিলেন।
চিত্রপরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক হারুন অর রশিদকে মন্ত্রণালয় থেকে আগামী দু`দিনের মধ্যে নতুন যৌথ প্রযোজনার প্রিভিউ কমিটির নির্বাচন চূড়ান্ত নামের তালিকা মন্ত্রণালয়কে দিতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত সকল যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হবে না।’
গত ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘বস ২’ ও ‘নবাব’ ছবি দুটো মুক্তি পায়। ছবি দুটো যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা মানেনি দাবি করে আন্দোলনে নামে ১৭ সংগঠনের চলচ্চিত্র পরিবার। সেই আন্দোলনের সূত্র ধরেই তথ্য মন্ত্রণালয় সঠিক নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণ স্থগিত করেছে।
অভিনেতা ফারুক বলেন, ‘আমরা একটা সুন্দর দিকে এগিয়েছি। আমরা পথে নেমেছি সুন্দর এবং সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য। বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টির এই চলচ্চিত্র যাতে ধ্বংস করতে না পারে কেউ। যদিও ইতোপূবে ধ্বংস করার অনেক টালবাহানা হয়েছে। এবং প্রতিবারই আমরা রুখে দিয়েছি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে। তাই তার আদর্শকে ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই, নতুন সন্দুর মনের মানুষদের নিয়ে।’
চলচ্চিত্রকে সমাজের আলোকবর্তিকার সমতুল্য করে তিনি বলেন, ‘সমাজের দুঃখ-দুর্দশার কথা চলচ্চিত্র তুলে ধরে। আজকে আমাদের ভাল লাগছে একটি কারণে সেটা হলো সত্য এবং সুন্দর জয়ী হয়েছে। আমরা সত্য এবং সুন্দরের আলো দেখতে পাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত হস্তক্ষেপে এই আলোর পথ দেখতে পাচ্ছি।’
ফারুক আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নয়। আমরাও চাই প্রচুর সিনেমা হোক। কারণ সিনেমা হল থাকলেও হবে না, চাই বেশি বেশি সিনেমা। তাই যৌথপ্রযোজনাও দরকার আছে।’ এজন্য তিনি প্রযোজক ও পরিচালকদের ছবি নির্মাণে মনোযোগী হওয়ারও পরামর্শ দেন।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি আন্দোলনরত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতেও পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।