খােলা বাজার২৪। শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮: আমিও একটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি। যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে বেনাপোল পর্যন্ত সড়কটির দুপাশে দুই হাজারেরও বেশি গাছ আছে। এর মধ্যে অনেক গাছ শতবর্ষীও। রাস্তার দুই পাশে এই বৃক্ষরাজী ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। সীমান্তের ওপারে এই সড়কটি পরিচিত যশোর রোড নামে। সীমান্তের ওপাড়েও রাস্তা চওড়া হয়েছে। কিন্তু একটা গাছও কাটা হয়নি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও এই সড়কটির রয়েছে ঐতিহাসিক অবস্থান। লাখ লাখ শরণার্থী এই সড়ক ধরে ভারতে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ যুদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। ফিরে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন তার ঐতিহাসিক কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। স্মৃতিবিজড়িত এই রাস্তাটি ৪ লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সময়ের দাবিতে এটাই বাস্তবতা। মানুষ বেড়েছে, গাড়ি বেড়েছে; রাস্তাও তাই বাড়াতে হবে।
কিন্তু আমার শঙ্কা হলো চার লেন করার জন্য রাস্তার দুই পাশে থাকা ২ হাজার ৩১২টি গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উন্নয়নের দোহাই দিয়ে শতবর্ষী এই গাছগুলো কেটে ফেলা হবে একটি আত্মধ্বংসী উদ্যোগ। আমি এই গাছগুলো না কেটে রাস্তা চওড়া করার দাবি জানাচ্ছি। এটা কি সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব এবং খুব সহজে। এক পাশের গাছগুলোকে মাঝখানে রেখে রাস্তা চওড়া করা যায়। তাহলে দুই পাশের গাছই বেঁচে যাবে। আর রাস্তার মাঝখানে শতবর্ষী গাছগুলো থাকলে সড়কটির যে ছায়া ঢাকা, পাখি ডাকা রূপ তাও অক্ষুণ্ন থাকবে।
আমি চাই ছোটখাটো বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিরক্ত করা না হোক। কিন্তু যশোর রোডের গাছ কাটার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই গাছগুলো বাঁচানোর আর কোনও উপায় নেই। শেখ হাসিনাই এখানে শেষ ভরসা। আর ২ হাজার ৩১২টি গাছের জীবন কোনও ছোট ব্যাপার নয়। তাই আমি এই গাছগুলো বাঁচানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি।
লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে নেয়া।