খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপে রাতারাতি ইন্টারনেট সেলিব্রিটি ভারতের দক্ষিণী অভিনেত্রী প্রিয়া প্রকাশ ওয়ারিয়র। যার চোখের চাউনি কাত হয়েছে বিশ্বের পুরুষ মহল। তবে প্রিয়ার চোখের চাউনিতে কাত হলেও, ওরু আদার লাভ ছবির মানিক্য মালায়া পুভির গানটি নিয়ে আপত্তি তুললেন হায়দরাবাদের এক মুসলিম যুবক। গানটিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভাবাবেগকে আঘাত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর সেই মামলাকে কেন্দ্র করেই গত সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ প্রকাশ ওয়ারিয়ার । – খবর নিউজ এইটট্রিনের।
হায়দরাবাদের এক যুবক ওরু আদার লাভের গানটি অর্থ বোঝার জন্য গুগুল সার্চ ব্যবহার করেন, গানের ইংরেজি অনুবাদ পড়ে তাঁর মনে হয় গানটিতে মুসলিম ভাবাবেগকে আঘাত করা হয়েছে। এরপরই ছবির নির্মাতা, সঙ্গীত পরিচালক ও প্রযোজকের নামে অভিযোগও দায়ের করেন সেই যুবক। তবে ছবির অভিনেতাদের সম্পর্কে কোনওরকম অভিযোগ দায়ের করেননি এই যুবক।
ভারতের প্রভাবশালী হিন্দি দৈনিক জাগরণের এক খবরে বলা হয়েছে, মুসলিম যুবকের ওই মামলার কারণে ছবিটির পরিচালক ওমর লুলুকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন প্রিয়া প্রকাশ। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ এ নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা থাকলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত জানাযায়নি।
পত্রিকাটি জানায়, মুসলিম যুবকের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ছবির পরিচালককে নোটিশ পাঠিয়েছিলো পুলিশ। হায়দারাবাদের ফলকনুমা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে নোটিশটি। একটি কপি ডাক মারফৎ পাঠানো হয় পরিচালক ওমর লুলুর কাছে। অন্যটি দেয়া হয় প্রিয়াকে।
ওমর লুলুর ‘ওরু আদার লাভ’ ছবিতে অভিনয় করছেন প্রিয়া। সেখানেই রয়েছে ‘মানকিয়া মালারাই পুভি’ গানটি। যে গানের একটি দৃশ্যে চোখের ইশারায় গোটা দুনিয়াকে ঘায়েল করেছেন দক্ষিণী অভিনেত্রী প্রিয়া। নেটদুনিয়া কাঁপিয়ে সেই ভিডিও এখন ভাইরাল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয়ার অনুরাগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও মালয়ালম সেই গানের কথা নিয়ে ওঠে অভিযোগ। তাই লক্ষ লক্ষ হৃদয় জিতেও ‘পদ্মাবত’ এর পথ ধরেই বিতর্কের চূড়ায় উঠছে লুলুর ‘ওরু আদার লাভ’। যদিও বিতর্কে পাত্তা দিতে রাজি নন পরিচালক লুলু।
তিনি দাবি করেন, ওই গানে কোনওভাবেই মুসলিম ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া হয়নি। আদ্যোপান্ত প্রেমের অনুষঙ্গে লেখা গানের কথা। তাছাড়া ১৯৭০ সাল থেকেই এই গানের জনপ্রিয়তা রয়েছে কেরলে। লুলুর এহেন ব্যাখ্যার পরে দুরকমের পন্থা নিয়েছে ফলকনুমা পুলিশ। ভারতীয় দন্ডবিধির ১৬০ ধারায় ফৌজদারি মামালা রুজু হয়েছে লুলুর বিরুদ্ধে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গান কেন ছবিতে থাকবে তার ব্যাখ্যা যেন দেন পরিচালক ওমর লুলু। সেই ব্যাখ্যা যদি কোর্টের কাছে সন্তোষজনক বলে মনে না হয় তাহলে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪১ ধারায় নতুন মামলা রুজু হবে ওমরের বিরুদ্ধে। তবে এই আইনি প্রক্রিয়া শুরুর আগে ১৬০ ধারার ফৌজদারি মামলাটি বন্ধ করে দিতে হবে।