খোলাবাজার২৪ঃ মঙ্গলবার, ১৫মে, ২০১৮ঃ ভোট শুরুর আগেই কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, বিরোধী দলের প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হলো খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এ নির্বাচনে অন্তত ৪০টি ভোট কেন্দ্র দখল করে নেয় আওয়ামী লীগ। এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়। শুরু হয়েছে ভোট গণনা।
এরমধ্যে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট চলাকালে মঙ্গলবার দুপুরে একটি কেন্দ্র পরিদর্শনের ফাঁকে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে একে ‘খেলা’ আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বলেছেন, ‘জালিয়াতি, কারচুপি, ভোট ডাকাতির’ ফলাফল খুলনাবাসী মেনে নেবে না।’
মঞ্জু বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে খেলার কি দরকার ছিল? এ নির্বাচন না হলে তো সমস্যা ছিল না। পুলিশের সামনে নৌকার লোকজন কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে সিল মারছে। ধরাও পড়ছে। অথচ তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। নির্বাচন কমিশনের লোকজনও এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
মঞ্জু সকালে ভোট দিয়ে প্রথমে ২৫টি ও পরে ৩০টি কেন্দ্রে তার এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন। পরে তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। এর মধ্যে দুটি কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দেয়ার ঘটনা দেখেন মঞ্জুর। পরে সে দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়।
মঞ্জু বলেন, ‘রূপসা স্কুল থেকে মাত্র ৩০ মিনিট আগে দেখে গেলাম সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু এসে দেখলাম সবগুলো বুথে নৌকায় সিল মেরে ব্যালট দিয়ে বাক্স ভরে রাখা হয়েছে। নির্বাচনের কাজে জড়িত কর্মকর্তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমার নির্বাচনী এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেয়া হচ্ছে।’
মঞ্জু জানান, যেখানেই কোনো ধরনের সমস্যার কথা শুনেছেন সেখানেই তিনি ছুটে যাচ্ছেন। কোনো অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন এই মেয়রপ্রার্থী।
এ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আপনি থাকবেন কি না- এমন প্রশ্নে মঞ্জু বলেন, ‘হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত থাকব। আমরা সরকারের এবং তার বাহিনীর এসব দুষ্কর্ম জাতিকে, বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই। প্রমাণ হবে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’
ফলাফল মেনে নিবেন কি না? জানতে চাইলে মঞ্জু বলেন, ‘ফলাফল তো পরের বিষয়। আগে সুষ্ঠুভাবে ভোট শেষ হোক। জালিয়াতি, কারচুপি, ভোট ডাকাতির ফলাফল খুলনাবাসী মেনে নেবে না।’
খুলনায় চার লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন ভোটারের জন্য এবার কেন্দ্র রয়েছে মোট ৯৮টি। এর মধ্যে জাল ভোটের অভিযোগে একটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল, দুটি কেন্দ্র এবং এবং একটি বুথে ভোট স্থগিত করা হয়। এর বাইরে একটি কেন্দ্রের অদূরে বিএনপির নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়েছে।
পাঁচজন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।