Tue. Jul 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,সোমবার, ০৫মে ২০১৯ঃ  ভারতের আদলে বাংলাদেশেও স্মার্ট সিটি তৈরিতে ভারত বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একই সঙ্গে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
সোমবার (৬ মে) শেরে বাংলানগরে অর্থমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণকাজ, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সময়ের আবর্তনে এ সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর ভর করে পরিপক্বতা লাভ করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার ভারতের সঙ্গে নানা সম্পর্ক গড়ে তুলছে। প্রকৃতপক্ষে ভালো সম্পর্ক, বিশ্বাস, পারস্পারিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে নীতি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।

তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণে ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ, রেলপথ, সড়ক, জাহাজ চলাচল, বন্দরসহ অবকাঠামো খাতে ১৭টি অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক গতিশীলতার কারণে শুধু শহরেই নয়, উন্নয়ন হয়েছে গ্রামীণ জনপদের।
সাক্ষাৎকালে অর্থমন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও গ্লোবাল আউট সোর্সিংয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বাংলাদেশে এখন জনমিতিক লভ্যাংশ (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) কাল চলছে, যা ২০৬১ সাল পর্যন্ত থাকবে।

দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন ট্রেড প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। বর্তমান যুগ হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, বায়োকেমিস্ট্রি, ব্লক চেইন টেকনোলজি, কোয়ান্টাম সায়েন্স, রোবোটিক্স, ন্যানো টেকনোলজি ইত্যাদির যুগ। আগামীর চাহিদা পূরণে শিক্ষা সংস্কারের আমাদের ক্লাসরুমগুলোতে পর্যায়ক্রমে এসব বিষয়ে শিক্ষা দিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারত চাইলে এই খাতেও বিনিয়োগ করতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস বা ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে ইএফডি ক্রয় প্রক্রিয়া এনবিআরে চলমান। এ প্রক্রিয়াতেও ভারতকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী বাংলাদেশকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি এ অঞ্চলের সব দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালনা ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দর।

রিভা গাঙ্গুলি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশকে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে আরো বেশি জোর দিতে হবে। ভারত বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে এলএনজি, বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে আরো বেশি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।