Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার ২৪,সোমবার,০৭অক্টোবর,২০১৯ঃ যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট গ্রেপ্তার হয়েছেন গতকাল (রোববার)। তবে চতুর্দিকের আলোচনা শোনে মনে হচ্ছে, সবে মাত্র গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। আসলেই সম্রাট তো সম্রাটই। তাই রাজধানীর গলির চায়ের দোকান থেকে শুরু করে দক্ষিণের প্রতিটি ঘরে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে সম্রাটের গ্রেপ্তারের খবর।

এদিকে, সম্রাটের কাকরাইলের নিজস্ব কার্যালয় ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টার তার চেয়েও বেশি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। কারণ, তার এ কার্যালয়টি সম্রাট নামের মতোই বিলাসী সব উপকরণে ঠাসা।

বিদেশি মদ থেকে শুরু করে টিভি, ফ্রিজ, বিদেশি আসবাব, মূল্যবান আলোকসজ্জার সরঞ্জামাদি কি নেই তাতে? সবই ছিল সেখানে। তবে এখন সেই কার্যালয়টিতে নেই শুধু সম্রাট! তবে তার রুমের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল বসার চেয়ারটি। এ যেন ইতিহাসের সেই সম্রাট যুগের আসল ‘সম্রাটী’ চেয়ার!

জানা গেছে, তার বাথরুম ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেখানে একাধিক ফ্রিজ ও ওয়াশিং মেশিনও ছিল। এসব ফ্রিজে ছিল বিদেশি মদ। দুই বছর ধরে তিনি বাসায় পর্যন্ত যেতেন না। সারা দিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাত্রিযাপন করতেন এ বিলাসবহুল কার্যালয়ে।

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সম্রাটকে নিয়ে রোববার দুপুরের পর ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখানে তার বিলাসবহুল রাজনৈতিক কার্যালয় দেখে বিস্মিত হয়ে যান কর্মকর্তারা।

সাত তলা ভবনের সপ্তম তলায় এক বিশাল ছাদবাগান। ওই বাগানে রয়েছে বহু প্রজাতির উদ্ভিদ। মাঝখানে রয়েছে একটি ফোয়ারা। সেখানে গেলে মনে হবে এটি যেন শহর থেকে হাজার মাইল দূরের কোনো পাহাড়ি এলাকার নির্জন স্থান।

ওই ছাদবাগানের পাশেই তার রাজনৈতিক কার্যালয়। এই কার্যালয়টি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পাশাপাশি ছিল আয়েশের জায়গাও।

কার্যালয়ের ভেতরের ফ্রিজে পাওয়া যায় গরুর মাংস, মুরগির মাংস, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। সঙ্গে ছিল বিদেশি মদের সমারোহ।

এই কার্যালয় যে কেবল রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার হতো না তার প্রমাণ পাওয়া যায় ভবনের একটি বেডরুম দেখে। পাওয়া যায় আলিশান খাট, সোফা, কাঠের আলমারি। ভবনের সপ্তম তলার চিত্রও একই। সেখানেও মিলেছে একটি বিলাসবহুল শয়নকক্ষ। কয়েক লাখ টাকার বিছানা, ড্রেসিং টেবিল ও নারীদের ব্যবহারের চিরুনিও দেখা মিলেছে ওই কক্ষে।

অভিযানে এক হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা, বেশ কিছু বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, দুটি ইলেকট্রিক শক মেশিন, একটি বিদেশি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব।

ক্যাসিনোকাণ্ড সামনে আসার পর সবচেয়ে আলোচিত নাম যুবলীগ নেতা সম্রাট। তিনি ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার গুরু হিসেবে পরিচিত। শুরু থেকেই তাকে খুঁজছিল র‌্যাব।

রোববার ভোররাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সহযোগী আরমানসহ তাকে গ্রেপ্তার করে বাহিনীটি। পরে তাকে আনা হয় ঢাকায়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনেও মামলা হবে বলে এরই মধ্যে জানা গেছে।