Tue. Sep 16th, 2025
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর ২০১৫: ঢোলের বাজনা, উলুধ্বনি, ধুনোর গন্ধ, মেলায় 72হাজারো পণ্যের পসরা; আর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে হাজারো ভক্তের অঞ্জলি আর হৈ চৈ- হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোপূজায় দেবী বিসর্জনের একদিন আগে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের চিত্র এমন। বিজয়া দশমীর শেষ মুহূর্তে হাজারো ভক্ত-অনুরাগীর পদচারণায় মুখর মন্দিরটি। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ভিড় থাকলেও সন্ধ্যার পর তা ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে। দর্শনার্থীদের চাপে প্রবেশ পথে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে দেবীর আশীর্বাদ পেতে পুজো দিতে আসেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সন্ধ্যার আগে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ভক্তদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে সবাইকে লাইন ধরে মেটাল ডিটেক্টরের ভেতর দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হয়েছে। লাইন ঠেলে ভেতরে ঢোকার পর দেবী দর্শনে ক্লান্তি কেটেছে ভক্তদের। দীর্ঘ সময় প্রতিমার সামনে দাঁড়িয়ে প্রণাম করলেন অনেকে। মা’কে জানালেন দুঃখ-সুখের কথা। সরেজমিন দেখা গেছে, পূজা মণ্ডপে ভক্তদের ভিড়ে দুর্গোৎসব পেয়েছিল সার্থক সার্বজনীন রূপ। রাজনৈতিক নেতারাও এসেছিলেন। অঘটন এড়াতে পুলিশ ও র‌্যাব সদ্যসরাও সর্বোচ্চ তৎপর ছিলেন। কিন্তু উৎসবের রঙে রঙিন মানুষের স্রোত সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের। নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করছেন পুলিশ, র‌্যাব ও সাদা পোশাকের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে উৎসবস্থলের পুরো কার্যক্রম। মূল মন্দিরের সামনেই আয়োজন করা হয়েছে মেলার। ধর্মীয় বিভিন্ন ধরনের জিনিস ছাড়াও সৌখিন আর প্রয়োজনীয় জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আছে পূজার নানা ধরনের মিষ্টান্ন। সেখানেও ভক্তদের ব্যাপক ভিড়। পরিবার নিয়ে পূজামণ্ডব পরির্দশন করতে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মধু সুদন বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের এই বড় উৎসব। ছুটির দিন থাকায় পরিবার নিয়েই পূজা দেখতে চলে এসেছি।’ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র তনুশ্রী দত্ত। বাবা-মায়ের কোলে চড়ে এসেছে প্রতীমা দেখতে। কিনেছে বেশ কয়েক রকম খেলনা। বায়না ধরেছে যাওয়ার সময় মিষ্টান্ন কিনে দিতে হবে। তার বাবা অঞ্জন দত্ত জানালেন, প্রতিবছরই পরিবার নিয়ে বিসর্জনের আগে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আসা হয়। সারা বছর ভালো থাকার জন্য দেবী দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে বাসায় ফেরেন। শুধু পরিবার পরিজন নিয়েই নয়, সব বয়সী মানুষের ছিল সরব উপস্থিতি। কেউ এসেছেন বন্ধুদের নিয়ে, কেউবা বান্ধবীকে নিয়ে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাইরে অন্য ধর্মের লোকজনও এসেছেন এই উৎসব দেখতে। শুক্রবার দেবী বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে এ বছরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবের।