Fri. Sep 12th, 2025
Advertisements

খােলাবাজার২৪,বৃহস্পতিবার ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ঃকৌতুহলী মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবন। নতুনত্ব ও অজানাকে জানার ইচ্ছা মানুষের বরাবরই প্রবল। তেমনই একজন কৌতুহলী এবং অদম্য যুবকের নাম সাখাওয়াত হোসাইন। ছেলেবেলা থেকেই সাইকেলের সঙ্গে তার বেশ সখ্যতা এবং দেশ ভ্রমণের প্রবল ইচ্ছা। মানুষকে ভ্যাট সম্পর্কে সচেতন করতে এবং ‘আমার দেশ আমি দেখবো’ এমনই এক ইচ্ছা থেকে সাইক্লিং করে প্রায় ১ হাজার ১৮৫ কি.মি পথ পাড়ি দিয়েছেন সাখাওয়াত। এই দূরত্ব অতিক্রম করতে তাকে টানা দশ দিন সর্বমোট পঁচাত্তর (৭৫) ঘণ্টা সাইকেল চালাতে হয়েছে।

সাখাওয়াত হোসাইন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পরিবারকে না জানিয়ে নিজের টিউশনের টাকা এবং পরবর্তীতে বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়েই সে এই ভ্রমণ সম্পন্ন করে। ভ্রমণের সময় পরিচিত কোনও বন্ধু, আত্মীয়, সরকারি বাংলোর বারান্দা বা কোনও স্কুলই ছিলো তার ঘুমানোর জায়গা। এই ভ্রমণে দশ দিন দশটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন সাখাওয়াত।

গত ১১ ডিসেম্বর সাখাওয়াত চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো.ইলিয়াস হোসাইন থেকে ভ্যাট সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত সাইকেল ভ্রমণের অনুমতিপত্র নেন। তবে যাত্রা শুরু করেন ২০ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম থেকে প্রথমে বাসে করে পঞ্চগড় যান সাখাওয়াত। ওখান থেকে ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর-গাইবান্ধা-বগুড়া-সিরাজগঞ্জ-টাঙ্গাইল-গাজীপুর-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা ভ্রমণ করে।

সাইকেলে ভ্রমণের কারণ এবং অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সাখাওয়াত ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘প্রত্যেকটা নাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে কর প্রদান করা। কিন্তু এদেশের অধিকাংশ জনগণ ভ্যাট বা কর কী তা জানেনই না। তাদেরকে ভ্যাটের বিষয়ে সচেতন করতে এবং নিজ দেশকে নিজ চোখে দেখার তাড়না থেকেই আমি সাইকেলে করে ভ্রমণ করেছি।’

এ ধরনের কাজের জন্য সাইকেলকে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে সাখাওয়াত বলেন, ‘আমার কাছে সাইকেলের চেয়ে উত্তম বাহন আর কিছু মনে হয় না। এটি পরিবেশবান্ধব এবং সাশ্রয়ী। তাছাড়া সাইকেলকে আমি খুব পছন্দ করি।’

১০ দিনের সাইকেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে সাখাওয়াত বলেন, ‘বাংলাদেশ যে অনেক সুন্দর দেশ তা বইয়ের পাতায় পড়েছি। তবে তা উপলব্ধি করতে পারি নি। আজকে আমি উপলব্ধি করতে পারি কতটা সুন্দর এই বাংলাদেশ। কেন এই দেশকে রাণী বলা হয়। এদেশের নদী, মাঠ, ঘাট দেখে যে কারোরই চোখ জুড়িয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশটা যেমন সুন্দর তেমনই বৈচিত্র্যময়। সাখাওয়াত বাংলাদেশের সব জায়গার মানুষ খুব আন্তরিক। সবাই আমাকে সহায়তা করেছে।’

তবে এখানেই থামতে চান না সাখাওয়াত। সাইক্লিং নিয়ে তার চিন্তা সুদূরপ্রসারী। তার ইচ্ছা মানুষ সাইক্লিং এর প্রতি আকৃষ্ট হোক। তার স্বপ্ন সাইকেল চালিয়ে একদিন সে পুরো বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে দেখবে।