Wed. Oct 15th, 2025
Advertisements

খােলাবাজার২৪, শুক্রবার ০৮ মে, ২০২০: আমের রাজধানীখ্যাত রাজশাহীতে আগামী ১৫ মে হতে শুরু হচ্ছে গাছ থেকে আম পাড়া। তবে সেটি দেশীয় গুঁটিজাতের আম। ভালো জাতের সুস্বাদু আম গাছ থেকে নামানো শুরু হবে ২০ মে থেকে।

‍শুক্রবার (৮ মে) রাজশাহী জেলা প্রশাসন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আম পাড়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

অসময়ে আম পাড়া ও কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাতকরণ ঠেকাতে কয়েক বছর ধরে কোন জাতের আম কখন পাড়া যাবে, তা আগেই ঠিক করে দিয়ে আসছে প্রশাসন। এবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৫ মে থেকে সকল প্রকার গুঁটি আম পাড়তে পারবেন চাষিরা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০ মে থেকে আমচাষিরা গাছ থেকে গোপালভোগ আম নামাতে পারবেন। এছাড়া রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম- মুজিববর্ষে রাজশাহীর বিষমুক্ত আম হবে জাতির জন্য উপহার। সেই ঘোষণা অনুযায়ী- করোনাকালেও অপরিপক্ব আম বাজারজাত ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। সুষ্ঠুভাবে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়েই আম নামানো হবে।

করোনায় আমের বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তা:

এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে চলমান পরিস্থিতিতে আম বাজারজাত করা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। এখনও পর্যন্ত রাজশাহীর আম বাজারজাত করণে প্রশাসন থেকে কোনো বিশেষ ব্যবস্থার উদ্যোগে নেওয়া হয়নি। এছাড়া শঙ্কার মুখে পড়েছে রাজশাহীর আমের বিদেশি বাজারও।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কৃষিপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করছে। সেখানে আম বাজারজাত করণে নিশ্চয় কোনো বাধা থাকবে না। তবে মানুষ কীভাবে কিনবে, আলোচনার বিষয় সেটা। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে বাইরে মানুষের আনাগোনা স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি দুশ্চিন্তার বিষয় হলো- আমের বিদেশি বাজার। বিদেশে রফতানির জন্য প্রায় ১০০ টন আম ফ্রুটব্যাগ লাগিয়ে উৎপাদন করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ৭০ থেকে ৭৫ টন নিশ্চিতভাবে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়। যা থেকে বড় অংকের অর্থ পান কৃষকরা। সেটি নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা।’

আম বাজারজাত নিয়ে শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ারে আম পাঠানোর উদ্যোগ নেয়ার চিন্তা করছি। ইতোমধ্যে সকল উপজেলায় নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া লকডাউন থাকলেও কৃষিপণ্য সরবরাহে কোনো বাধা নেই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক উম্মে সালমা জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আমবাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৫৭৪ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৭৮ মেট্টিক। গতবছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন।