Tue. Aug 26th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪, রোববার  ১০ মে, ২০২০: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দুর্ভোগে পড়া শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া সমস্যা নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী। সংকট চলাকালে মেসের ভাড়া মওকুফ বা হ্রাসের ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে সমন্বিত সিদ্ধান্ত জানানো পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সতর্কতার সাথে বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দেন তিনি।

মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষিত হওয়ায় এখন বাড়িতে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু করোনার পাশাপাশি মেস ভাড়া পরিশোধের চাপ তাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আবাসন সংকটে জর্জরিত বিদ্যাপীঠটি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থীর অধিকাংশই নির্ধারিত চারটি আবাসিক হলে স্থানসঙ্কুলানের অভাবে কুমিল্লা শহর, কোটবাড়ি ও ক্যাম্পাসের আশপাশের বিভিন্ন মেসে বসবাস করেন। তাদের অনেকেই পড়াশোনার খরচ নির্বাহ করার জন্য একাধিক টিউশন, কোচিং, পার্ট টাইম চাকরি ইত্যাদি পেশার সাথে যুক্ত। এমনকি কেউ কেউ পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে সংসার খরচেও এই আয় থেকে অর্থের যোগান দিয়ে থাকেন। বর্তমানে তাদের এসব আয়ের উৎসও বন্ধ। এমন অবস্থায় মেস ভাড়া পরিশোধের চাপে অসহায়বোধ করছেন শিক্ষার্থীরা।

মেস ভাড়া পরিশোধে সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন চৌধুরী বলেন, আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই টিউশন-এর মাধ্যমে পড়ালেখা ও যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের পক্ষে মেস ভাড়া পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় মানবিক দিক বিবেচনায় অন্তত আগামী দুইমাসের মেস ভাড়া মওকুফের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেয়া হোক।

শিক্ষার্থীদের এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহিত উদ্যোগের ব্যাপারে প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, আপাতত দুশ্চিন্তা না করে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করুক। এই মহামারির সময়ে মালিক পক্ষের প্রতি মেস ভাড়ার জন্য চাপ না দেয়ার অনুরোধ করেছি। উপাচার্য মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদসমূহের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে শিগগির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি মিটিং করার কথা রয়েছে। সেখানে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। সিদ্ধান্তক্রমে আনুষ্ঠানিক চিঠিও পাঠানো হতে পারে।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলছেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুরোধ করলে বা চিঠি পাঠালে মেস মালিকরা মানবে না। এতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের দিক বিবেচনা করে অন্তত এক-দুই মাসের ভাড়া মওকুফ বা হ্রাস করে সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আমি জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশনের মেয়র বা সদর দক্ষিণের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলব। ইতিমধ্যে আমি কয়েকজনের সাথে কথা বলেছিও।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী জানান, দুর্যোগের এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে মেস ভাড়ার প্রসঙ্গটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একক সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে না। এতে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বিত সিদ্ধান্ত লাগবে। এজন্য ব্যাপারটি নিয়ে আমি কুমিল্লার ডিসির (জেলা প্রশাসক) সাথে কথা বলব। কথা বলে দেখি কি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।