খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৬ নভেম্বর ২০১৬: জাতীয়করণ হওয়া কলেজশিক্ষকদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি করা মানবে না বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। পুরনো সরকারি কলেজশিক্ষকদের দাবি, জাতীয়করণ হওয়া কলেজের শিক্ষকদের ‘ক্যাডার’ মর্যাদা না দিয়ে তাদের ‘নন-ক্যাডার’ হিসেবে সরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এছাড়া ওইসব শিক্ষকদের চাকরি শুধু ওই জাতীয়করণ হওয়া কলেজেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস শিক্ষা সমিতির নেতারা এই দাবি জানান। প্রয়োজনে দাবি পূরণে তারা আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
বর্তমানে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক আছেন। এদের মধ্যে অন্তত ৪ হাজারই পুরনো জাতীয়করণকৃত কলেজের শিক্ষক।
এদিকে যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি কলেজ নেই, সেসব উপজেলায় একটি করে বেসরকারি কলেজকে সরকারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকার সর্বশেষ তিন দফায় ২৬৩টি কলেজ জাতীয়করণ করেছে। তাতে আরও প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক সরকারি হবেন। এছাড়া ২০১২-১৩ সালে জাতীয়করণ করা আরও বেশকিছু কলেজের শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ হওয়ার পথে।
বিসিএস শিক্ষা সমিতির নেতারা সংবাদ সম্মেলন বলেন, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে তারা নানা পরীক্ষায় যোগ্যতার বিচারে মানোত্তীর্ণ। অপরদিকে যেনতেনভাবে চাকরি নিয়ে এসেছে জাতীয়করণকৃত কলেজের শিক্ষকরা। তাই এ ধরনের শিক্ষকদের চাকরি ‘ক্যাডার’ বলে গণ্য করা যাবে না। এটা বিসিএস শিক্ষা সমিতি মেনে নেবে না।
তারা বলেন, জাতীয়করণকৃত কলেজশিক্ষকদের ‘ক্যাডারে’ অন্তর্ভুক্ত করা হলে অনাগত বিসিএসে যোগ দেয়া ক্যাডারদের পদোন্নতি পিছিয়ে যাবে। কেননা, জাতীয়করণকৃত শিক্ষকরা মাঝখানে ঢুকে যাবেন। আগামী লেকচারার পদোন্নতি তারা পাবেন। এমনকি সহযোগী ও অধ্যাপক পদে যেহেতু পদ কম, তাই ভবিষ্যতে কোনো না কোনো বড় কলেজ থেকে উল্লিখিত পদে যাবেন। এতে ক্যাডার শিক্ষকদের সুযোগ সংকুচিত হবে। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরা জ্যেষ্ঠতা হারাবেন।
সমিতির নেতারা বলেন, এর ফলে নতুন প্রজন্মের মেধাবী শিক্ষকেরাও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার আর কোনোভাবে মেধাবীদের আকর্ষণ করতে পারবে না। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে বর্তমান প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক ‘সংখ্যালঘুতে’ পরিণত হবেন, যা ক্যাডারের শৃংখলায় বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে।
তারা জানান, বিসিএস শিক্ষা সমিতি জাতীয়করণের বিরোধিতা করছেন না। তাদের আপত্তি ওইসব কলেজের শিক্ষকদের বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে। এসময় জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করার দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সমিতির মহাসচিব শাহেদুল খবির চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।