খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: ত্বকের ঔজ্জ্বলের জন্য বিশ্বজুড়ে বিপুল জনপ্রিয় কোরিয়ান তরুণ-যুবারা। তাদের স্বচ্ছ কাঁচের মত স্কিন তরুণীদের মনে দোলা জাগায়। কিন্তু ভেতরের রহস্য হল বিশ্বের যে কোন প্রান্তের নারী-পুরুষের চাইতে কোরিয়ার যুবারা রুপচর্চা ও সৌন্দর্যের প্রতি দারুণভাবে আসত্ত। বিবি ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার, প্রাকৃতিক নির্যাস, টোনার, ক্লিনজার, সেরামের মত ত্বকের যতেœর প্রতিটি উপাদান দক্ষিণের তরুণদের নিত্যদিনের অংশ।
দেশটির এক জিমের পরিচালক ও প্রশিক্ষক লি ও জুং বলেন, ‘মেকআপ আমাকে আরো আকর্ষণীয় ও বিশ্বাসী করে তোলে। ত্বকের প্রতি যতেœর কারণে আমি আমার গ্রাহকদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’ তরুণদের রুপচর্চার প্রতি এমন আর্কষণের কারণে ইতুদি হাউস,মিশা, ন্যাচার রিপাবলিক এবং টনি মলি’র মত কসমেটিকস কোম্পানিগুলোর আয় দাঁড়িয়েছে বার্ষিক ১০ বিলিয়ন ডলারে।
৩৭ বছরের চুই ইয়ং সুন বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে থাকার সময় আমার ত্বক অনেক রুক্ষ হয়ে পড়েছিল, এরপর আমি আমার মায়ের ত্বকের যতেœর উপাদানগুলো ব্যবহার করতে শুরু করি। তবে বিয়ের পর আমার দেশের অনেক যুবকদের মত আমি ত্বকের যতেœ অবহেলা শুরু করি। কিন্তু আমার স্ত্রী আমাকে নিয়মিত টোনার ও ময়েশ্চারাইজায় ব্যবহার করতে উৎসাহ যুগিয়েছে।’ আর এর মাধ্যমেই দক্ষিণ কোরিয়ার যুবকরা ‘পুরুষদের পুরুষাচিতই হওয়া উচিত’ এমন পুরনো ধ্যান-ধারণাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তবে কোরিয়ার প্রতিটি স্তরের মানুষ এটি পছন্দ করছেন না। কিছু কিছু কোরিয়ানের মতে, ‘ত্বকের সুস্থতার জন্য ত্বকের যতœ নেয়াটা ভাল কিন্তু যখন ছেলেরা ফাউন্ডেশন, আইব্রু দিয়ে মুখ ভর্তি করে রাখে, তা অপছন্দের।’
ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের জরিপে দেখা যায়, সারা বিশ্বের ২০ভাগ ছেলেদের কসমেটিকস পণ্য বিক্রি হয় কোরিয়ায় এবং দু’বছর বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে থাকা এই দেশটি আশ্চর্যজনকভাবে ছেলেদের মেকআপের শহর হয়ে উঠেছে। কোরিয়া প্লাস্টিক সার্জারি এবং কসমেটিকস সার্জারির দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ স্থানে আছে। ২০১৬ সালে রুপচর্চা ও সৌন্দর্য বিষয়ক গবেষণায় তাদের ব্যয় হয়েছিল ১২৩ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া কসমেটিকস রপ্তানির দিক দিয়ে এই দেশটি বিশ্বের ষষ্ঠস্থানে আছে। বিবিসি।